Posts

Showing posts from 2017

পরিচিতি

জগতের যত কঠিন কাজ আছে তার মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজ খুব সম্ভবত নিজের ইন্ট্রোডাকশান দেওয়া। আমি কে , আমি কী এর উত্তর দেওয়ার থেকে কঠিন কাজ নেই। আমার এই পুঁচকে ব্লগের বয়স খুব বেশিদিন না  এবং আদৌ কেউ এই ব্লগ পড়ে কিনা সে নিয়ে আমার ঘোরতর সন্দেহ আছে , তাও  নিজের পরিচিতিটা দেওয়া উচিত, তা সে যত কঠিন কাজ ই হোক না কেন।  তাহলে শুরু করা যাক...... আমার নামঃ  -আমার ভাল নাম সেঁজুতি , ইংরিজিতে বানান বিভ্রাটে বেশির ভাগ লোকের কাছে আমি সেঞ্জুতি  , তাই আমার ডাক নামটা আমার বেশি পছন্দের, সেটা হোল ঝিল্লী, এই নামটা আমার দিদার দেওয়া। ট্যাঁ ট্যাঁ  করে সারাদিন চিৎকার করতাম বলে হয়ত।  আমি কী করি? -এটার উত্তর দেওয়া সবচাইতে সহজ। আমি ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াই। আমার বয়স কত? - আমার জন্ম নব্বই দশকের গোড়ার দিকে। বাকিটা আর বললাম না।  আমার ঠিকানা -কেন এই তো - http://choshmaebongityadi.blogspot.in  তবে আমি যেখানে 'থাকি' সে জায়গাটা হোল কোলকাতা। রিলেশানশিপ স্ট্যাটাস   - টারমিনালি সিঙ্গেল  রিলিজিয়াস ভিউস   - কি সব্বনাশের প্রশ্ন !  আমার ...

রঙের বাক্স আর লেটারবক্স

মাঝে মাঝে বড্ড মনখারাপ জমিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে। পুরোনো হলদেটে ইনল্যান্ড চিঠির মতো। চিঠি কেউ লেখেই না আজকাল আর। আগে বছরে একবার বিজয়ার পর বড় মামা পাঠাতো।এখন  তাও আসে না। বড...

নীল আর সবুজ

পুরোনো পরিত্যক্ত বাড়ির ঝুলওয়ালা জানলায় হলদে ল্যাম্পের আলো এসে ধাক্কা মারে। কোণের দিকে একটা বাদুড় বাসা বেঁধে ঝুলে আছে কদিন ধরে। ক্লিশেড উপন্যাসের সেটিং থেকে মন খারাপ ক...

'ইটস কমপ্লিকেটেড'

" People run from rain but sit in bathtubs full of water." -Charles Bukowski,The Roominghouse Madrigals: Early Selected Poems, 1946-1966 কাল বিকেলে অটো ধরার জন্য যখন দৌড়াচ্ছি, খেয়াল করে দেখি, আকাশের মুখ ভার ভার, রাস্তায় ধূলো পাক খেতে খেতে সামনের দিকে দৌড়াচ্ছে। তখনি বুঝেছি, আজ আর রক্ষে ...

জুঁই, রজনীগন্ধা আর বৈশাখ

---এসো হে--- বাসের এসি টা খারাপ। হুস হুস করে ঠান্ডা হাওয়া মাথায় লাগে কট কট করে আর এদিকে কালচে কাঁচের ওপাশে রোদে জ্বলে যাওয়া জংলি ফুল দেখে বোঝা যায় বোশেখ এসেছে। 'না না, হেল্প লাগবে না, এমনিই একটু ঘুরে দেখছি'র উইন্ডো শপিংয়ের আড়ালে এসির হাওয়া খাওয়ার ছুতোয় বোশেখ এসেছে। 'নিয়ে যান দিদি, চৈত্র সেল....সব হাফ দামে'র তাগাদায় এসেছে। পয়লা বৈশাখের সেলফিতে এসেছে আর আমাদের বাড়িতে এসেছে রজনীগন্ধার গন্ধে। পয়লা বৈশাখ এলে মন টন বড্ড খারাপ হয়।ঐ দিনই বুড়ি ফাঁকি দিয়ে পালিয়েছিল কিনা। কান মাথা ঝাঁ ঝাঁ করে, সেটা রোদের তাপে না বুড়ির ওপর রাগে ঠিক জানিনা। দিদা রজনীগন্ধার গন্ধ সহ্য করতে পারতো না। বলতো মরা মানুষের গন্ধ। আমার কিন্তু খুব খারাপ লাগতো না, দিব্যি মিষ্টি মিষ্টি, খারাপ কী। ছোটবেলায় পয়লা বৈশাখে মানে ছিল দিদার হাতের পাঁঠা রান্নার গন্ধে আগে আগে খিদে পেয়ে যাওয়া,দোকানে রজনীগন্ধা, নতুন জামা আর ঘাড়ে হাতে ছোপ ছোপ পন্ডস পাউডার লাগিয়ে বিকেলে মা আর দিদার সাথে যতন মামার দোকানে হাল খাতা করতে যাওয়া। আরেকটা জিনিস হতো, প্রভাতফেরী। আমাদের পাড়ায় একটা মাতৃভাষা রক্ষা সমিতি ছিল একটা। পয়লা বৈশাখে আর ২১শে ...

আত্মশ্লাঘা এবং অন্যান্য

  ইশ কি বিশ্রী দিনকাল পড়েছে। রাস্তায় বেরোলে হাঁক পাঁক গরমে বিশ্রী হাল হচ্ছে, অটোতে উঠলে অটোওয়ালা খুচরোর জন্য ধমকাছেন, মিনি বাসের কন্ডাক্টর 'ভেতরে চাপুন, ভেতরে খালি' বলে গু...

জেঠালালের দেশ আর ভুলভাল গল্প

Image
----আগের দিনের পর---- সোনার কেল্লা দেখে আমরা চললাম আমাদের পরের গন্তব্য মানে মরুভূমির উদ্দেশ্যে। বাস থেকে দুপুরের রোদে ঝামা পোড়া রোদে যখন এসে নামলাম তখন চোখ খুলে তাকানো যাচ্ছে না, এত তেজ রোদের। নামতে না নামতেই দুজন ঢোলা ধূসর রঙের জোব্বা পরা লোক ছুটে এলেন। এঁরাই জিপ সাফারিতে নিয়ে যাবেন। আমি আর দীপাঞ্জলি বাংলায় গুজুর গুজুর করছিলাম সেটা হয়তো ওনাদের কানে গেছিল, ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাংলায় চলুন চলুন বলে হাসতে হাসতে নিয়ে গেলেন জিপের কাছে। এদের নানা ভাষার প্রতি দখল দেখলে অবাক হতে হয়। বিশেষত যখন খাঁটি মার্কিনি উচ্চারণে ইংরিজি বলছিলেন আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের অপদার্থতায় লজ্জা পেয়েছিলাম- 'নেভার বিন টু স্কুল ম্যাডাম। বাট উই ক্যান স্পিক ইংলিশ ওয়েল। অলসো ক্যান টেক ইওর পিকচার্স ইফ ইউ উইশ।' মরুভূমির এবড়ো খেবড়ো জমিতে প্রচন্ড গতিতে জিপ লাফাতে লাফাতে এগোচ্ছে, স্টিরিওতে ওখানকার লোকসংগীত আর আমাদের কয়েকজনের মিলিত চিৎকার হাওয়ার ঝাপটায় সাথে মিলে মিশে যাচ্ছিল। সব সময় চুপচাপ থাকা হারশিৎ(হরষিত লিখছিলাম, পরে মনে পরল প্রথমদিন ঐরকম উচ্চারণ করায় বেচারা কিরকম একটা উচ্ছে সেদ্ধ খাওয়া মুখ করে ধপ করে বসে পড়েছিল। তার...

'সোনা কিতনা সোনা হ্যায়....'

Image
আমুর কাছে খারাপ ছিলাম না। একা থাকতে দিব্যি লাগছিলো। প্রথম কয়েকদিন দক্ষিণাপণের ফুচকার জন্য প্রাণ কেঁদেছিল ঠিকই তবে তারপর আর অত মন টন খারাপ হয়নি। শেষ সপ্তাহটা যে কীভাবে হুশ করে কেটে গেল টেরই পেলাম না। ৩৫ দিনের গালগল্প আর প্রায় হাজারখানেক ফোটো নিয়ে কলকাতায় ফিরেছি তারও ২৪ ঘন্টা কেটেছে। কিন্তু আজ মন খারাপের গল্প না। বরং এটা 'এন্ড উইথ এ ব্যাং' মানে শেষ শনিরবির ঘুরতে যাওয়ার গল্প। শুরুতেই মোটামুটি ঠিক ছিল যে শেষ ঘোরাটা জয়সলমীরই হবে, তাই বিস্তর ঘ্যানর ঘ্যানরের পর শেষ মেশ গত শুক্রবার আমরা ২২জন রওনা হয়েছিলাম জয়সলমীরের দিকে। ----শুরুর গল্প---- হোস্টেলের একটা বদখত নিয়ম আছে। উইকেন্ডে ছুটি নিলে রাত ১০টার পরে আর ওই চত্বরে থাকা যায়না। লোটাকম্বল সমেত গেট থেকে ধাক্কা মেরে বের করে দেয় প্রায়। এইবার বাস ড্রাইভারের তো ভীষন সাংঘাতিক সময়জ্ঞান। অবধারিত আধা ঘন্টা লেট করবেন, ওই এগারোটার আগে বাস আসার চান্স নেই। এবার এই একটি ঘন্টা আমাদের পিং পং বলের মতো তাড়া খেয়ে এদিক ওদিক দৌড়তে হয় বলে কেউই সাড়ে দশটার আগে বেরোয় না।সেদিন শেষ মেশ লেট করে সবাই যখন গেটের দিকে ছুটছি রোগা গার্ডকাকু এসে দাঁড়িয়ে রাস্তা আটকালে...

চাটনি, সোয়াগ এবং ইত্যাদি

চারতলায় হোস্টেলে আমার ঘরটা দিনের বেলায় যেমন গরম রাতে তেমনি ঠান্ডা। জানলা খুললেই সবুজের  বাহার। সবাই আলো নিভিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে, অন্ধকারের মধ্যে থেকে গাছের অবয়বের ফাঁক দিয়...

একটা বিচ্ছিরি প্রেমের গল্প

-এই, শুনছিস? -বল। -এরকম রেগে রেগে উত্তর দিচ্ছিস কেন? আমার কী দোষ বল। -তোর দোষ না তো কি আমার দোষ! তুই, তুই একটু আগে বুঝলেই আমাকে আজ এই সিচুয়েশনে পরতে হতো না। আচ্ছা তুই কী একটুও বুঝিস ...
Page 1 of 10123...10Next »Last