ব্যোম , টুনি আর ইত্যাদি
- Get link
- X
- Other Apps
নীচের বসার ঘরে একচিলতে হলদে ল্যাম্পের আলো আলতো করে রান্নাঘর পেরিয়ে এসে উঁকি মারছে।
দৌড়ে আসতে গিয়ে বুক ধড়ফড়, পেছনে আড়চোখের দৃষ্টি, লম্বা কালো ছায়াটা আঙ্গুল বাড়িয়ে প্রায় পায়ের পাতা ছুঁয়ে ফেলেছে। এক লাফে একতলার সিঁড়ির মুখ, খলবল করে দৌড় , ল্যান্ডিং- ইশশ! লাল রঙের কেন্নো একটা, গা ঘিন ঘিন করে, এক লাফে সেটাকে টপকে একতলার সিঁড়ির ল্যান্ডিং-এদিক থেকেই তো আওয়াজটা এলো, গেলো কই এর মধ্যে! হাঁচোর পাঁচোর করে দোতলার ল্যান্ডিং। লালচে দাগটা শুকিয়ে বাদামি হয়ে গেছে, সকালে দেখেছিলাম। এখন কালোচুলের মত লাগছে। চিলেকোঠার ভেতরটা কীরকম একটা আঁশটে গন্ধ। ঘর মোছেনি আজ কেউ ঠিক করে।
একটু একটু মন খারাপ হচ্ছে আবার, কালকের থেকে কম। দমবন্ধ ভাবটা নেই যদিও আর। তুলনামূলক শান্ত বাড়িটা আজ, বুবুনপিসিদের বাড়িতে আলো জ্বলেনি, নইলে কাঁচের জানলার ওপর হলদে আলো ছরকুটে পড়ে ভেঙে যায় অন্যদিন। ছায়ায় দাঁড়িয়ে গান গাইছে বুবুনপিসি, সুর চেনা, কিন্তু কী গান মনে পড়ছে না। এখনও কেউ ফেরেনি বাড়ি। একটু পরেই লোকজন আসবে, আবার গলার কাছটা ব্যথা ব্যথা করছে। দমবন্ধ, অম্বল ইত্যাদি।
ছাদ, চাঁদ আর অন্ধকারে পাতাবাহারের ছায়া। বড্ডো তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে আজ। খুব হাওয়া দিচ্ছে আজ, পুরোন করবী গাছটা থাকলে এখন তারের ওপর ঝাপটা মারতো।
'মোরা সাঁইয়া বুলায়ে আধি রাত কো' এবং ইত্যাদি। ছাদের উপর কাঁচা সিমেন্টে কিৎকিতের খোপ কাটা হয়েছিল, দাগ টা এর মধ্যেই ঝাপসা হয়ে এসেছে। সত্যি বড্ড তাড়াহুড়ো হয়ে গেছে। পুঁচকেটা বেচারা অত রক্ত দেখে ভয় পেয়ে গেছিল। মেট্রো বেটার অপশন ছিল। কিন্তু একে অদ্দুর যাওয়ার এনার্জি ছিল না উপরন্তু ঊনত্রিশ টাকা বেকার খরচ। অতঃপর..রেলিংয়ের ওপর দিয়ে ঝুঁকি, হলদে ল্যাম্পের আলো পাশের বাড়ির দেয়ালে পড়েছে, ছাদের শ্যাওলা খুঁটে খুঁটে জড়ো করছে আরেকবার, কাঠগোলাপের গাছটার হালকা মিঠে গন্ধ, চেনা।
ঠুমরিটা আবার রিপ্লে হয়েছে, হিরাদেবী খুব দরদ দিয়ে গাইছেন 'নদীয়া বৈরী..' ভাসলেই হল, ডুবলেই হল। মুখ ঘুরিয়ে আরেকবার গলির মুখে লাগানো হলদে টুনির আলোটা ছোঁয়ার চেষ্টা করল, অল্প শীত করছে। একটু গরম, ওম পেলে ভালো হত।কিন্তু এডভেঞ্চার খতম, কার্টেন ড্রপ এবং একটি আদ্যোপান্ত প্রিটেনশাস ন্যাকাকান্নার শেষ।
- Get link
- X
- Other Apps
Comments
Post a Comment